আলোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
আদেশ অনুযায়ী, মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা ৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের ৯০ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে। এসব জমি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, ডবলমুরিং, কোতোয়ালি, পটিয়া, বাকলিয়া, বায়েজিদ, সীতাকুণ্ড, শ্রীপুর ও হাটহাজারী থানায় এবং গাজীপুর সদর থানায় অবস্থিত।
একইসঙ্গে, তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাদ্দাম হোসেন, মর্জিনা বেগম, আলমাছ আলী, বেদারুল ইসলাম ও দুটি প্রতিষ্ঠান—টপটেন ট্রেডিং হাউজ এবং গোল্ড স্টার ট্রেডিং হাউজের নামে থাকা ৬৬টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব হিসাবে জমা রয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ভুয়া নাম ব্যবহার করে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঋণ গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ করেন। পরে এই অর্থ দিয়ে দেশে ও বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলেন। এমনকি তারা এসব সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টাও করছিলেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রক্ষা করতে জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক ও ফ্রিজের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
দুদক আরও জানিয়েছে, এস আলম গ্রুপভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে বিনিয়োগ ও ভুয়া ঋণের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এই মামলার অনুসন্ধান এখনো চলমান রয়েছে এবং সম্পদ জব্দ ও হিসাব ফ্রিজের মাধ্যমে তা রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মত দিয়েছে দুদক।